কে এই ধর্ষক রনি?অবশেষে ফাঁস হলো তার আসল পরিচয়

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় প্রাইভেটকারে ধর্ষণচেষ্টার সময় পথচারীদের প্রতিরোধের মুখে পালিয়ে যাওয়া সন্দেহভাজনকে আটক করে পুলিশে দেয় জনতা। তার নাম মাহমুদুল হক রনি। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও দেখে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই রনিকে ধরে ফেলে পুলিশ।

শনিবার দিবাগত রাতে এই তরুণীদের প্রাইভেটকারে তুলে এনে ধর্ষণের চেষ্টার সময় মোহাম্মদপুর এলাকায় সন্দেহভাজন রনি এবং তার গাড়ি চালককে ধরে ধোলাই দেয় পথচারীরা। পরে তারা প্রাইভেট কার ছেড়ে নগ্ন অবস্থায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

ঘটনার সময় উপস্থিত রাফি আহমেদ তার ফেসবুক পেজে সেহরির সময় দুটি ভিডিও পোস্ট করেন। এরপরই সেটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। দিনভর রনিকে শেরে বাংলানগর থানায় রাখার পর বিকালে ঘটনার শিকার তরুণী মামলা করেন।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রনি জানাই, গাড়ির মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মদ পান করায় বেসামাল ছিল সে। এই বেসামাল অবস্থায় সংসদ ভবন এলাকা সংলগ্ন খেজুর বাগান থেকে ‘দুই যৌনকর্মীকে’ গাড়িতে তুলেছিল। তাদের একজনকে মোহাম্মদপুরের কলেজগেট এলাকায় নামিয়ে দেয়া হয়।

একজনকে নামিয়ে দেয়ার সময় গাড়ির ভেতরে থাকা অন্য তরুণী চিৎকার করছিল।

পুলিশ সূত্র জানায়, ধস্তাধস্তি করে ওই তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করছিল রনি। এ অবস্থাতেই জ্যামের মধ্যে আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে রনিকে আটক করে।

কে এই রনি?

অভিযুক্ত মাহমুদুল হক রনি উচ্চশিক্ষিত এবং দুই সন্তানের জনক। বন্ধুদের কাছে রনি হক নামে পরিচিত। তার বড় ভাই একজন আইনজীবী। রনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করে ব্যবসা করছেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে রনি থাকে হাজারীবাগ থানার মিতালী রোডের ধানমন্ডি-১৫ নম্বর বাড়িতে।

জানা গেছে, প্রায় রাতেই রনি টয়োটা প্রিমিও গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হয় বন্ধুদের সঙ্গে। রাতভর গুলশান, বারিধারা, উত্তরা এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে মদের আড্ডায় বুঁদ হয়ে থাকে সে। ঢাকার কয়েকজন সংসদ সদস্যের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভালো সম্পর্কের কথা বলে বেড়ায় রনি। রাতে চলাফেরার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়লে এমন পরিচয় দেয় সে। রনি গাজীপুরের কাপাসিয়ার সুনমানিয়া গ্রামের মৃত ফজলুল হকের পুত্র।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণেশ গোপাল বিশ্বাস জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

তিনি আরও বলেন, মামলার বাদী অভিযোগ করেছে, শনিবার রাতে তারা দুই তরুণী কলেজগেট এলাকায় মাহমুদুল হকের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ ২৯-৫৪১৪) থামিয়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ করেন। ওই সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন মাহমুদুলের ব্যক্তিগত গাড়িচালক। কিছু দূর যাওয়ার পর এক তরুণীকে শিশু মেলা এলাকায় নামিয়ে দেয়া হয়। গাড়িতে থাকা আরেকজনকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন মাহমুদুল।

এ সময় তরুণী হাত-পা নাড়ছিলেন। চিৎকার করছিলেন। এ ঘটনা টের পেয়ে রাস্তায় থাকা মানুষজন গাড়ি থামিয়ে চালক ও মাহমুদুলকে পিটুনি দেয়। ওসি জানান রনিকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তার গাড়ি চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।-বিডি২৪লাইভ